মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাই পথে আসা গরু-মহিষে সয়লাব হয়ে গেছে কক্সবাজারের উখিয়া। অবৈধভাবে আসা এসব গরু-মহিষ রাখা হচ্ছে কুতুপালংসহ উখিয়ার বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে। এর ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব এবং এর সাথে দেশীয় গরুর খামারিরা পড়েছেন বিপাকে। এতে তাদের গরুর দাম কমে গেছে স্থানীয় বাজারে। এমনটাই অভিযোগ তুলছে উখিয়ার খামারি উদ্যেক্তারা।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তুম্ব্রু সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু-মহিষ প্রবেশ করতে বিশাল একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। তুম্ব্র পর্যন্ত সিন্ডিকেট প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল নামে এক ব্যাক্তি। তিনি তুম্ব্রু এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
তুমব্রু হয়ে অবৈধভাবে আসা গবাদিপশু গুলো সাপ্লায় ও রশিদ বানানোর মাধ্যবে বেচা বিক্রির দায়িত্ব পালন করেন কুতুপালং এর একাধিক ব্যাক্তি সেখানে প্রাথমিকভাবে প্রধান দুজনের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন কামাল উদ্দিন ও নাসির উদ্দিন। তার দুজনই কুতুপালংয়ের বাসিন্দা।
তারা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে স্থানীয় প্রভাব কাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মায়ানমার থেকে গরু-মহিষ কুতুপালং এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাপ্লায় দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
সম্প্রতি আগষ্টের শেষের দিকে নাসির ও কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ৪৫টি মহিষের পাল তুম্ব্রু হয়ে উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় প্রবেশ করেন। সেই মহিষের পাল কুতুপালং রফিকের আমবাগানে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
এই অবৈধ মহিষের পাল তারা বৈধ করতে উখিয়ার বাজার ইজারা ডাককারী থেকে অবৈধভাবে রশিদও বানিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
কামাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিএনপি নেতা আমরা এই সময়েও ব্যবসা না করলে কখন করব। এই মহিষের পাল আমার।
উখিয়া গরুবাজার ইজারা ডাককারী নুরুল আমিন ধপা 'কে প্রশ্ন করা হলে 'মায়ানমার থেকে আসা মহিষকে বৈধতা দিতে রশিদ দেওয়া যায় কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবৈধ-বৈধ বুঝি না বাজারে তুলে বেচাকিনা করলেই আমরা রশিদ দিব। আরেক প্রশ্নের উত্তরে ইজারাদার বলেন, কুতুপালং কামাল থেকে বাজার ইজারার রশিদ বই আছে কারণ সে কুতুপালং বাজারের সাইড তিনি দেখাশোনা করেন।
উখিয়া গরুবাজার ছাড়া কুতুপালং কোন গরু-মহিষের বাজার নাই বলে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানবীর হোসেন। তিনি জানান, উখিয়া গরু বাজারের রশিদ বই যদি কুতুপালং কোন ব্যাক্তির কাছে থাকে তাহলে সেটা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি অবগত হয়েছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই মহিষের পাল দেখবাল করা এক স্থানীয় ব্যাক্তি জানায়, এটি রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে তারা ব্যবসা করতেছে। এখন তাদের ক্ষমতা আছে তাই তারা এই ব্যবসা করতেছে। কোন প্রশাসন এই মহিষ ধরবে না। কারণ প্রশাসনসহ সবাই কমিশন নিয়েছেন এই মহিষ থেকে।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসরুখী জানান, সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার রয়েছে তারপরও চোরাই কারবারির বিভিন্ন বিকল্প রোড় ব্যবহার করে এসব অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য উদঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।